কাগজি মুদ্রার মাধ্যমে পশ্চিমা বিশ্বের বৈধভাবে সম্পদ চুরির প্রক্রিয়া

কাগজি মুদ্রার মাধ্যমে পশ্চিমা বিশ্বের বৈধভাবে সম্পদ চুরির প্রক্রিয়া, Gold and silver coin
Gold and Silver Coin

ইহুদি-খ্রিস্টান মিত্রশক্তি International currency, অর্থাৎ আন্তর্জাতিক মুদ্রা ব্যবস্থা কাগজি মুদ্রার মাধ্যমে পশ্চিমা বিশ্বের  বৈধভাবে সম্পদ চুরির প্রক্রিয়া বা যে উপায় বের করেছে তা একটি ঘটনার ওপর দৃষ্টিপাত করলেই বুঝতে পারা যায় । তা ঘটেছিল ১৯৩৩ সালের এপ্রিল মাসে। তখন মার্কিন সরকার একটি আইন পাস করে যার মূল কথাগুলি ছিল এরকম :


১. জনগণের কাছে আর স্বর্ণমুদ্রা ও সোনার বার জমা রাখা যাবে না।
২. স্বর্ণ মুদ্রা কে আর বেচাকেনার মাধ্যম হিসাবে অর্থাৎ মুদ্রা হিসেবে ব্যবহার করা যাবে না।
৩. যদি কারো কাছে একটি নির্দিষ্ট তারিখের পর সোনা পাওয়া যায় তাহলে তাকে ১০০০০$ ডলার জরিমানা করা হবে অনাদায়ে ৬ মাসের জেল দেয়া হবে।
৪. যাদের কাছে স্বর্ণমুদ্রা ও সোনার বার আছে তারা তা সরকারের জমা দিবে এবং এর বদলে মূল্য হিসেবে ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক যা সেই সময় একটি বেসরকারি ব্যাংক ছিল তাদেরকে আউন্স প্রতি ২০ ডলার কাগজে ছাপানো মুদ্রা দিবে।

এই ঘটনার পরে বেশিরভাগ আমেরিকান তাদের সোনার বদলে কাগজী মুদ্রা নেবার জন্য ছুটে যায় ব্যাংকে। অপরদিকে ব্রিটিশ সরকারও ঠিক একই বছর একই ধরনের আইন করে সে দেশে স্বর্ণ ও রুপা কে মুদ্রা হিসেবে ব্যবহারের অযোগ্য বলে ঘোষণা করেন।

আমেরিকার জনগণ ১৯৩৩ আগে ব্যাংকের স্বর্ণ জমা দিয়ে কাগজি মুদ্রা গ্রহণ করার ঠিক এক বছর পর ১৯৩৪ সালে সে দেশের সরকার অবাধে কাগজি মুদ্রার ৪১% মূল্যপতন ঘটায়। আর ১৯৩৩ সালে স্বর্ণ জমা রাখার জন্য যে আইন করে তা নিষিদ্ধ বলে ঘোষণা করে। 

এটা শুনে আমেরিকার জনগণ স্বর্ণ কেনার জন্য ভিড় জমায়। কিন্তু এবার প্রতি আউন্স সোনার বিনিময় মূল্য নির্ধারণ করা হয় ৩৫ ডলার। অথচ ১ বছর আগে তারা এই সোনা জমা নিয়েছিল প্রতি আউন্স ২০ ডলারের বিনিময়। এই প্রক্রিয়ায় তাদের সম্পদের প্রায় ৪১ শতাংশ চুরি করে নেয়া হয় যখন কাগজের মুদ্রার মূল্যপতন হয় তখন কিভাবে সাধারন জনগনের সম্পদ বৈধ ভাবে চুরি করা সম্ভব হয় এটা ছিল তারই একটি পরিকল্পনা।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এই ঘটনার ২ বছর আগে ১৯৩১ সালে সেপ্টেম্বর মাসে ব্রিটিশ পাউন্ড এর প্রায় ৩০% মূল্যপতন হয় এবং ১৯৩৪ সালের মধ্যে তা ৪০% হয়। ফ্রান্সেও ঠিক একই অবস্থা হয় সে দেশের মুদ্রা ফ্রাঙ্ক এর প্রায় ৩০% পতন ঘটে এছাড়া ইটালিতে ৪১%  সুইজারল্যান্ডে ৩০% এবং গ্রিসের মূল্যপতন ইউরোপ আমেরিকা কে ছাড়িয়ে সর্বোচ্চ ৫৯% হয়।